Monday, December 17, 2007

মন খোঁজে মন


ঠান্ডা টা বেশ ভালোই পড়েছে । গরম কফি আর কম্বলের একটা আলাদা মজা আছে, এই সময় । এই শীত কালের আরও একটা মজা হল খাওয়ার । বিভিন্ন রকম সব্জি, নতুন গুড়, কড়াইশুঁটির কচুরি, বেশ কিছু পিঠে । সারাদিন একটু উত্তাপের জন্যে মানুষ হাহাকার করে । আমরা যারা ঘরে বসে রাত্রি যাপন করি, তারা হয়ত কোন দিনও বুঝব না সেই কষ্টটা । আমাদের কাছে যেটা সুখের দিন, সেই সুখের দিন টাই অন্যের অসুখের দিন ।

যদিও আমাদের অনেক কিছুই অন্যের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, অথচ আমরা তার কোন খবরই রাখি না । নিজেদের বুদ্ধিমান ভেবে নিজেদের মত একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেরা খুশি হই, সামনের জন কি ভাবল, তাতে আমাদের কিচ্ছু যায় আসে না; কিন্তু সত্যিই কি কিছুই যায় আসে না ? নাকি এসব নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার সময় বা মানসিকতা কোনটাই আমাদের নেই ?

আমরা তো ভগবান এর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি, মান-অভিমান, দুঃখ-যন্ত্রনা সবই যখন আছে, তাহলে এই মেনে নেওয়া বা মানিয়ে নেওয়া, এই সহনশীলতাটা কেন থাকবে না ? আসলে হয়ত ভবিষ্যতের আপোস হীন দিনের স্বপ্নের পেছনে ছুটতে ছুটতে, আমরা ভুলেই গেছি "আমাদের" নিজেদের । এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পেছনে ছুটছি । আর সব থেকে মজার ব্যাপার হল যে, এই পথের প্রতিটি পদক্ষেপে কিন্তু আমরা আপোস করেই ফেলছি ।

সেদিন একটা কথা শুনলাম limited compromise, বেশ ভাল লাগল । অর্থাৎ , আপোস আমাদের করতেই হবে এটা যখন জেনেই গেছি তখন তার একটা সীমান্তকরণ জরুরী । এবার এই সীমান্তকরণ'টা করবে কে ? আমাদের বুদ্ধি বা বিবেক । সেও যে সব সময় ঠিক সীমান্তকরণ করতে পারবে -- এই বিষয় কি আমরা নিশ্চিত ? নাকি এটা শুধুই কথার কথা যে, মানুষ মানুষের জন্যে (?)

Monday, August 27, 2007

মনের কথা



শতাব্দী প্রাচীন জীবনধারা,
বাঁচার চাপে জীবন-মরা।
চলতে চলতে পেছন ফেরা,
চাওয়া-পাওয়ার হিসাব করা।

আশায় আশায় বসে থাকা,
শুনবো কারুর মনের কথা...
সেই মনেরই মাঝখানে,
রবে আমার নামটি লেখা।

মনের কথা মনেই রাখি,
ভাবি কবে হব পাখি।
এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকি,
ভাবলে জলে ভরে আঁখি।

অনেক দিন হল,
হয়না কোন কথা...
মনের মধ্যে জমে আছে,
না বলা কথার ব্যাথা।

Saturday, August 25, 2007

বাধ্য জীবন




হোতাম যদি পাখি কোনো
থাকত নাকো বিনিদ্র স্বপ্ন

হতোনা শিখতে "অ,আ" পড়া,
হতোনা,ক্লাসে নজর কাড়া।

থাকত নাকো হাজার বাধা,
সকাল বেলা গলা সাধা।

শিখতাম না যে,খাবার নিয়ম
খেতে গিয়ে বিশাল,"বিষম"।

হোত না ভরতে জমার খাতা,
ঘামাতে হোত না,এত মাথা।

পোয়াতে হোত না সংসার জ্বালা,
বুড়ো বয়সে অবহেলা।

এই যদি হয় মানব জীবন,
মাকে আমি করব বারন।

পাখি হয়েই আছি ভালো,
চাই না গো মা জ্ঞানের আলো।

Thursday, August 9, 2007

পুজোস্মৃতি


.
আজ আকাশ,বেশ পরিস্কার,টুকরো মেঘের আনাগোনা।তার ফাঁকে ফাঁকে নীল আকাশের উঁকি ঝুঁকি ভালই লাগে।কেমন একটা পুজো পুজো গন্ধে চারিদিক সুরভিত হছে।
দুর্গা পুজো,যখন ছোটো ছিলাম,তখন দুর্গা পুজোর,একটা আলাদা মজা ছিল।বাবা,কবে মা কে নতুন জামা কাপড় কেনার জন্য টাকা দেবে,সেটা তে আমাদের ভাই বোনের নজর থাকতো,কারন তারপরেই আমাদের জামা,কাপড় জুতো আসতো।এর পর থাকতো,পুজোর হাতখরচা।পঞ্চমী থেকেই পুজো সুরু হয়ে যেতো।
পাড়ার পুজো প্যান্ডালেই,সারাটা দিন কাটত।নতুন জামা পরা,তা থেকে নতুন মাড়ের গন্ধ বেরত,নতুন জুতো পরে পায়ে ফস্কা পড়ত,পায়ে হেঁটে ঘুরে ঠাকুর দেখা হতো।তার একটা আলাদা আনন্দ ছিল।নবমীর রাত থেকেই মনটা খারাপ হয়া সুরু হতো।দশমীতে পুজো শেষের ঢাকের বাজনা,শুনলেই মনে হতো একটা কিছু যেন,চলে যাছে,আবার একবছরের, পথ চেয়ে বসে থাকা।পাওয়াতেই তখন আনন্দ ছিল।
এখন পুজটা পাল্টাল, না আমার মানসিকতা,সেটা বুঝতে পারি না।তবে কিছু যে একটা পাল্টেছে,এটা বেশ বুঝতে পারি,কারন মনের সেই আনন্দটা যেন আমায় ছেড়ে অন্য কারুর কাছে চলে গেছে।এখন হয়তো অনেক ভাল জামা পরার সামর্থ আছে,কিন্তু ইছে হয় না।বেশ কয়েকজনকে জামা কাপড় দেবার ভার,আমার ওপর।মনে করে করে,তাদের কিনতে কিনতেই,নিজের জন্য আর কেনার ইছা চলে যায়।
তবে আমার দেওয়া জামা,কাপড় পরে যখন কেউ আনন্দ পায়,তখন একটা আলাদা আনন্দ পাই,যেটা ভাষায় বোঝানো সম্ভব না।
হয়তো,এখন দেওয়াটাই আনন্দ।

Tuesday, August 7, 2007

অন্য মা



অনুরনন,সুর এ সুর মেলানো।কার সুরে,যে কার সুর এর মিল হয়,এ বোঝা বড়ো শক্ত।হয়তো আজ সুরের মিলন হলেও,কাল বেসুরো হতে পারে।এই কারনেই বোধ হয় এত মিলন,এবং তার বিছেদ।

এটা আমার প্রথম লেখার প্রয়াস,অনেক ভুল হবে,জারা পড়বেন তারা নিজ গুনে আমাই ক্ষমা করবেন এই আশা রাখলাম।আর যিনি আমায় এই লেখার উতসাহ দিয়েছেন,তাঁকেও জানাই,অশেষ ধন্ন্যবাদ।

আমার এই ছোট্টো জীবনেও,বেশ কিছু ব্যক্তিত্ত এসেছেন,এবং এক সময় চলেও গেছেন। সবার কথা মনেও নেই,কিন্তু এক জন এর কথা আমি কোনো দিন ভুলতে পারব না,তিনি হলেন আমার পরম প্রিয় মামনি।

মামনি আমার নিজের কোনো,কেউ ছিলেন না,আমার এক বন্ধুর প্রেমিকার মা।একদিন অই বন্ধুই আমার পরিচয়,করিয়ে দেয়।তারপর থেকে আস্তে আস্তে মামনির বারিতে আমার যাওয়া আসা সুরু।

কিছু দিন পর ব্যপারটা,এমন একটা জায়গায় পৌঁছলো যে একদিন ও এরকম হত না,যে কলেজ থেকে মামনির বারি না গিয়ে আমি নিজের বারিতে ফিরেছি।মামনি রোজ আমার জন্য জলখাবার বানিয়ে তারপর অফিসে জেতেন।তারপর সন্ধ্যা বেলা অফিস থেকে ফিরে আবার রান্না,এবং বেশির ভাগ দিনই আমি রাত এ খেয়েই বারি ফিরতাম।

আসলে মামনির কোনো ছেলে ছিল না,তাই হয়ত আমাকেই নিজের ছেলের মতই ভাল বাসতেন।যদিও আমার মা বাবা ব্যপারটা ভাল চোখে দেখেনি।বাড়িতে জানার পর থেকেই,আমার ওপর নজর দারি সুরু হল।কিছুদিন পর থেকে সময়ের হিসাব রাখা সুরু হল,ফলস্বরুপ,আমার মামনির বাড়ি যাওয়াও বন্ধ হল।

কিছু দিন পর আমার সেই বন্ধুর কাছে খবর পেলাম মামনিরা বাড়ি পাল্টেছেন,আমি আর নতুন বাড়ির ঠিকানা নেই নি।তাআর অ বেশ কিছু দিন পর,আমার সেই বন্ধুর সাথেও সুর কেটে গেল।

বছর দুয়েক আগে হটাত মামনির পুরন পাড়ার এক্তি লোকের সাথে আমার দেখা হয়,একথা,সেকথায় মামনির কথা জিগাস করলাম,"দাদা আআপ্নি জানেন আমার মামনি এখন কথাই থাকে?"সেই দাদা ত আকাশ থেকে পড়ার মত করে আমাই জিগাস করল,"কেনো তুমি কিছু জান না?"আমি জানিনা বলার পর,মুখ তা নিছু করে বল্ল,"মামনি কিছুদিন আগে, ব্লাড ক্যন্সার হয়ে মারা গ্যছেন।

এরপর আমার বলার আর কিছু নেই,এটা আমার একটা না বলা দুখঃ কে, বলে একটু হাল্কা হলাম।